গত এক দশকে দেশে শিক্ষার হার বাড়লেও, শিক্ষার মান বাড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বরেন,গত এক দশকে দেশে শিক্ষার হার বাড়লেও মান বাড়েনি। ফলে, রাষ্ট্রের সর্বত্র নৈতিকতার অবক্ষয় দেখা গিয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে কিশোর গ্যাং এর মতো নিকৃষ্ট কালচার, মাদকের পথে হেটে নষ্ট হয়েছে আগামীর প্রজন্ম। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে জোর দিতে হবে নৈতিক শিক্ষায়।
বুধবার (২০ নভেম্বর) পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, শিক্ষার অগ্রগতির প্রয়োজনে বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডি পরিবর্তন করতে হবে। যারা এখানে নিয়মিত আসতে পারবে, ছেলেমেয়েদের খোঁজ-খবর নিতে পারবে, নিয়মিত শিক্ষক-শিক্ষিকার সাথে কথা বলতে পারবে, তাদেরকে নিয়ে ছোট আকারে একটি গভর্নিং বডি করার অনুরোধ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে এটা করতে পারলে দ্রুত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা যাবে। শিক্ষকগণ সবসময় আমাদের কাছে গিয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব নয়; কাজেই এ ধরনের একটা গভর্নিং বডি যদি তৈরি হলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম আরো বেশি গতিশীল হবে বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, যে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছে সবাই কিন্তু এখানে পুরস্কার পাবে না। আজকে যারা পুরস্কার পাচ্ছে তারা একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। আর যারা পুরস্কার পাচ্ছে না তাদেরকে ওই ধরনের কমিটমেন্ট নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে যে আগামীতে আমিও যাতে এই পুরস্কারটি পেতে পারি। এখন থেকে সে অধ্যবসায়, সেই চেষ্টা চিন্তা তোমাদের মধ্যে থাকতে হবে এবং প্রতিটি জায়গায় হার জিত আছে। কাজেই যারা জিতবে তারা যেনো যারা হেরে গিয়েছে তাদের সাথে যাতে কোন ধরনের ওই মনোভাবনা না দেখাই যে আমি বড় হয়ে গেছি তাকে কেন আমি মানবো? কাজেই এ ধরনের কোন বৈষম্য থাকা উচিত নয়।
মেয়র শাহাদাত বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আজকে একটি নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। আমরা চাই সব জায়গায় একটি সাম্যতা থাকুক। শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। শিক্ষাই হচ্ছে একটা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষাকে বাদ দিয়ে কোন কিছুই হতে পারে না। আমাদের যেমন একটা স্পাইনাল কর্ড আছে। স্পাইনাল কর্ড ভেঙ্গে গেলে যেমন আমার শরীর প্যারালাইজড হয়ে যায়, ঠিক একইভাবে কোন জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা যদি ভেঙ্গে যায় তখন এই জাতি আর দাঁড়াতে পারেনা। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। আজকের ছাত্র-ছাত্রী একদিন এদেশের কর্ণধার হবে। একদিন তারাও বিচারক হবে। বিচার করতে গিয়ে যদি কোন নিরীহ লোক হয়রানির শিকার হয় তাহলে ওই শিক্ষার আর কোন দাম থাকবে না। পুঁথিগত বিদ্যার চাইতে নৈতিক শিক্ষায় সবাইকে শিক্ষিত হতে হবে কারণ পুঁথিগত বিদ্যা আর পর হস্তে ধন নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জিন্নাত পারভীন, বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষকাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।